July 17, 2025

  • Home
  • All
  • আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে জেলা প্রশাসকদের সজাগ থাকার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
Image

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে জেলা প্রশাসকদের সজাগ থাকার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে জেলা প্রশাসকদের সজাগ থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বা শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা মস্ত বড় ইস্যু। এটা আমাদের এখন এক নম্বর বিবেচ্য বিষয়। এখানে যেন আমরা বিফল না হই, কারণ এটাতেই আমাদের সমস্ত অর্জন’।

আজ রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক সম্মেলন ২০২৫ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. ইউনূস এ কথা বলেন।

সকল নাগরিকের সুরক্ষা বিধান করা সরকারের দায়িত্ব উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘আমরা এখন থেকে যেসব কর্মসূচি গ্রহণ করবো, সেখানে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার থাকবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা ও দেশের সকল মানুষকে সুরক্ষা প্রদান করা। নারী ও  শিশু এবং সংখ্যালঘুসহ সকল নাগরিকের সুরক্ষা দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। কে কোন মতবাদে বা রাজনৈতিক চেতনায় বিশ্বাসী সেটা বিবেচ্য নয়। কারণ সরকার দেশের সকল মানুষের সরকার।  তাই তাকে সুরক্ষা দেওয়া আমার কাজ’।

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার যেন ক্ষুন্ন না হয় সেদিকে মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনকে সজাগ থাকার নির্দেশ দেন তিনি। ড. ইউনূস বলেন, সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দেওয়া মস্ত বড় দায়িত্ব। এই ইস্যুতে সারা দুনিয়া নজর রাখছে আমাদের উপরে। একটা ছোট্ট ঘটনা সারা দুনিয়ায় চাউর হয়ে যায়। 

তিনি বলেন, ‘আমি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে বলেছি আপনারা সংখ্যালঘু হিসেবে কোন কিছু দাবি করবেন না, দেশের নাগরিক হিসেবে দাবি করবেন। কারণ দেশের নাগরিক হিসেবে সংবিধান আপনাকে যে অধিকার দিয়েছে সেই অধিকার রাষ্ট্রের কাছে আপনার প্রাপ্য। এটা দাবি নয়, আপনার পাওনা’।

নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজারদর নিয়ন্ত্রণে রাখতে মাঠ পর্যায়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘বাজার দর নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এটা নিয়ে জেলা প্রশাসকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা হতে পারে কার জেলায় বাজারদর কতটা ভাল নিয়ন্ত্রণে আছে। কোনো চাঁদাবাজি বা অন্য যেসব অসুবিধা থাকে সেগুলো দূর করতে হবে’।

পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে না, অন্তর্বর্তীকালীন  সরকার এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। 

প্রধান উপদেষ্টা সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করে বলেন, পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে এখন যে পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগছে না, এই তথ্য মাঠে-ঘাটে জনসাধারণের মধ্যে পৌঁছে দিতে হবে। পুলিশ ভেরিফিকেশনের নামে হয়রানি হয়, এটি বন্ধ করতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম সনদের মত পাসপোর্ট পাওয়া প্রতিটি মানুষের অধিকার।

সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা তৈরি করার আহ্বান জানিয়ে জেলা প্রশাসকদের অধ্যাপক ইউনূস বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে সৃজনশীল কাজ করার সুযোগ তোমাদের পুরো মাত্রায় রয়েছে। আশা করি তোমরা সেটা গ্রহণ করবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, বাজারদর নিয়ন্ত্রণ, জমির রেকর্ড পত্র থেকে শুরু করে অন্যান্য সেবা অনলাইনে প্রদান, প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধিসহ সরকারি সেবাকে জনবান্ধব করার ক্ষেত্রে সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে সুস্থ প্রতিযোগিতা হতে পারে।

জন্ম সনদ একজন নাগরিকের অবশ্যই প্রাপ্য উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন,  যে কোনো বয়সে এবং যে কোনো সময়ে একজন নাগরিক জন্ম সনদ চাইতে পারে। তাকে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। জন্ম সনদ একজন নাগরিকের দালিলিক প্রমাণ যে ওই ব্যক্তি এই দেশের নাগরিক। কারণ এই জন্ম সনদ দিয়েই তার অন্যান্য কাজ করতে হবে। এটা না হলে জাতীয় পরিচয়পত্র হচ্ছে না, পাসপোর্ট হচ্ছে না। জন্ম সনদ পেতে একজন হয়রানির শিকার হচ্ছে কি না সেটা দেখতে হবে।

সরকারকে একটা ‘খেলার টিম’ অভিহিত করে অধ্যাপক ইউনূস জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশে বলেন,‘সরকারকে যদি একটা ক্রিকেট বা ফুটবল টিমের সঙ্গে তুলনা করা হয় তাহলে এটা একটি টিম। এই সরকারের ছয় মাস চলে গেলো, এটাকে আমি বলছি সরকারের প্রথম পর্ব।

প্রথম পর্বের কোন ভুল থাকলে সেটাকে ঠিকঠাক করে এখন আমরা খেলার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। এখন কাজ হলো কর্মপদ্ধতি ঠিক করা। খেলা হলো একটা সামগ্রিক বিষয়, একজনের ভুলের কারণে অন্যরা সাফল্য থেকে বঞ্চিত হয়। পুরো টিমের সাফল্যটা গন্তব্যে পৌঁছাতে হবে। প্রস্তুতির কোথাও ঘাটতি থাকলে সেটাকে পূরণ করা দরকার’।

প্রধান উপদেষ্টা জেলা প্রশাসকদের ভয়-ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে নিজের মতো করে মাঠ প্রশাসন পরিচালনা করার আহ্বান জানান। একইসাথে তিনি সরকার প্রধান বা উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের অহেতুক স্তুতি বা প্রশংসা করার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানান।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী পরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া, ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম ও পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক ছাবেদ আলী বক্তব্য রাখেন।

সূত্রঃ বাসস।

Related Posts

বিএসটিআই ও রাশিয়ার ফেডারেল এজেন্সির মধ্যে মান নির্ধারণ এবং প্রযুক্তিগত নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা জোরদারে সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরিত

বিএসটিআই ও রাশিয়ার ফেডারেল এজেন্সির মধ্যে মান নির্ধারণ এবং প্রযুক্তিগত নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা জোরদারে সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরিত

বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে মান নির্ধারণ এবং প্রযুক্তিগত নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা জোরদারে একটি গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরিত হয়েছে।…

Jul 17, 2025
জাপানের অর্থায়নে গাইবান্ধায় এসকেএস চক্ষু হাসপাতালের জন্য চোখের চিকিৎসা সরঞ্জাম প্রদান প্রকল্প উদ্বোধন

জাপানের অর্থায়নে গাইবান্ধায় এসকেএস চক্ষু হাসপাতালের জন্য চোখের চিকিৎসা সরঞ্জাম প্রদান প্রকল্প উদ্বোধন

গাইবান্ধা জেলায় অবস্থিত এসকেএস চক্ষু হাসপাতালের জন্য চক্ষু চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ প্রকল্পের উদ্বোধন উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৫ জুলাই, ২০২৫)…

Jul 17, 2025
ফুজাইরাহ চেম্বার চেয়ারম্যানের সঙ্গে বাংলাদেশ কনসাল জেনারেলের সৌজন্য সাক্ষাৎ

ফুজাইরাহ চেম্বার চেয়ারম্যানের সঙ্গে বাংলাদেশ কনসাল জেনারেলের সৌজন্য সাক্ষাৎ

সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফুজাইরাহ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির চেয়ারম্যান শেখ সাঈদ বিন সরুর আল সারকি-এর সঙ্গে মঙ্গলবার…

Jul 17, 2025
Scroll to Top