July 31, 2025

  • Home
  • All
  • বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহ বৃদ্ধি, রাজস্ব উৎপাদন এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে ডিসিসিআই।
Image

বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহ বৃদ্ধি, রাজস্ব উৎপাদন এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে ডিসিসিআই।

দেশে ব্যবসা-বান্ধব ও বিনিয়োগ-বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ দ্বিগুণ করা, আর্থিক খাতে সুশাসন ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা, ঋণের সুদের হার কমানো, দেশীয় ও বিদেশি বিনিয়োগ সম্প্রসারণে নীতিগত সহায়তা অব্যাহত রাখা, অবকাঠামো খাতে সমন্বিত উন্নয়ন, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাজার ব্যবস্থাপনা উন্নত করা, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে ভ্যাট হ্রাস এবং শিল্প খাতের জন্য দীর্ঘমেয়াদী সমর্থনমূলক জ্বালানি মূল্য নির্ধারণ নীতি প্রণয়ন করা প্রয়োজন। এমন মন্তব্য করেছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকিন আহমেদ। তিনি ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে চেম্বার আয়োজিত “বাংলাদেশ অর্থনীতির দ্বি-বার্ষিক অর্থনৈতিক অবস্থা ও ভবিষ্যৎ দৃষ্টিভঙ্গি: বেসরকারি খাতের প্রেক্ষাপট জুলাই-ডিসেম্বর ২০২৪” শীর্ষক সেমিনারে এ কথা বলেন।

ডিসিসিআই সভাপতি তাসকিন আহমেদ সেমিনারে অর্থনীতির সামগ্রিক চিত্র নিয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা, মুদ্রানীতি, মুদ্রাস্ফীতি, বেসরকারি বিনিয়োগ, বৈদেশিক বিনিয়োগ (FDI), কৃষি, শিল্প ও সেবা খাত, CMSME, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, লজিস্টিক অবকাঠামো, দক্ষতা উন্নয়ন এবং আর্থিক খাতের অবস্থা তুলে ধরেন। রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এখন একটি চ্যালেঞ্জ হওয়ায় তিনি সরকারী ব্যয়ের ক্ষেত্রে আরও কৃচ্ছ্রসাধন নীতি প্রয়োগের পরামর্শ দেন।

তিনি বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ দ্বিগুণ করার পরামর্শ দেন, অনাদায়ী ঋণ কমাতে কঠোর নজরদারি, আর্থিক খাতে সুশাসন ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এবং উদ্যোক্তাদের মধ্যে আস্থা পুনরুদ্ধারে ঋণের সুদের হার হ্রাসের প্রস্তাব দেন। বাজার পর্যবেক্ষণ জোরদার করে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, অবৈধ সিন্ডিকেট ভাঙতে আইন-শৃঙ্খলা কঠোর প্রয়োগ এবং বিলাসবহুল পণ্যে ভ্যাট বাড়ানো ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে ভ্যাট হ্রাসের পরামর্শ দেন।

তিনি দেশীয় ও বিদেশি বিনিয়োগ সম্প্রসারণে নীতিগত সহায়তা অব্যাহত রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার বাজারকে বাংলাদেশের পণ্যের জন্য সম্ভাবনাময় রপ্তানি গন্তব্য হিসেবে উল্লেখ করেন। শিল্প কার্যক্রম নির্বিঘ্ন করতে নিরাপত্তা, স্বল্পমূল্যের অর্থায়ন এবং অবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

এসএমই খাতের উন্নয়নে ঋণপ্রাপ্তির নীতিমালা সহজ করা, স্বল্পমূল্যের অর্থায়নের জন্য বিকল্প অর্থায়ন ব্যবস্থা চালু করা এবং ডিজিটাল অর্থায়ন পদ্ধতি সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন তাসকিন আহমেদ। তিনি জ্বালানি খাতে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা, নেটওয়ার্ক ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন এবং শিল্প ও সাধারণ ভোক্তাদের জন্য সাশ্রয়ী জ্বালানি মূল্য নির্ধারণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) এবং সচিবের রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত মো. আবদুর রহিম খান বলেন, ৫০০ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে ৪০ বিলিয়ন ডলারের রাজস্ব আয় একটি বিশৃঙ্খলা এবং এটি অগ্রহণযোগ্য। তিনি বলেন, সরকারী সব সেবা সম্পূর্ণ অটোমেশন এবং জাতীয় সিঙ্গেল উইন্ডোর সঠিক বাস্তবায়ন না হওয়ায় সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, লজিস্টিক নীতি এবং ডব্লিউটিওর বাণিজ্য সুবিধা চুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা গেলে বাণিজ্য ব্যয় ১০ থেকে ১৫% পর্যন্ত কমানো সম্ভব। তিনি হালকা প্রকৌশল খাতকে অর্থনীতির জন্য একটি গেম-চেঞ্জার হিসেবে উল্লেখ করে গাজীপুরে একটি ‘টেকনোলজি সেন্টার’ স্থাপনের উদ্যোগের কথা জানান।

আলোচক হিসেবে পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. এম মসরুর রিয়াজ বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বিলম্ব এবং অতিরিক্ত মুদ্রা ছাপানোর কারণে ২০২২ সালে মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে যায়। তবে ২০২৪ সালের শেষ দিকে কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপের ফলে মুদ্রাস্ফীতি কিছুটা কমেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ বলেন, পরবর্তী অর্থবছরে বিশাল ঘাটতি বাজেট ঘোষণা করা উচিত নয়। ঘাটতি বাজেট পূরণে ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণ নিতে হলে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক ড. মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, পোস্ট-এলডিসি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শিল্পে সম্মতি বাড়াতে এবং জন-নিজি সমন্বয় জোরদার করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক (গবেষণা) ড. সায়েরা ইউনুস বলেন, সরবরাহপক্ষের কারণে মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে গেছে, তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যথাসময়ে মুদ্রানীতির মাধ্যমে হস্তক্ষেপ করেছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের ইআরডি-এর অতিরিক্ত সচিব এ. এইচ. এম. জাহাঙ্গীর বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণের জন্য বাংলাদেশ পুরোপুরি প্রস্তুত, তবে সরকারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট সব অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা করে নেওয়া হবে।

ডিসিসিআই-এর সহ-সভাপতি মো. সেলিম সুলায়মান এবং পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

Related Posts

বাংলাদেশ-চীন কৃষি সহযোগিতা নিয়ে স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টার সঙ্গে চীনা রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ

বাংলাদেশ-চীন কৃষি সহযোগিতা নিয়ে স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টার সঙ্গে চীনা রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ

বুধবার (৩০ জুলাই, ২০২৫) বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত মি. ইয়াও ওয়েন অন্তর্বর্তী সরকারের মাননীয় স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা…

Jul 31, 2025
ফুলব্রাইট স্কলারদের অভিনন্দন জানালেন ইউএস চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স

ফুলব্রাইট স্কলারদের অভিনন্দন জানালেন ইউএস চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স

২০২৫-২৬ সালের ফুলব্রাইট বিদেশি শিক্ষার্থী ও বিদেশি ভাষা শিক্ষণ সহকারী কর্মসূচিতে নির্বাচিত অংশগ্রহণকারীদের যুক্তরাষ্ট্রে রওনা দেওয়ার আগে তাদের…

Jul 31, 2025
সেপ্টেম্বরে শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে SL-MICE Expo 2025

সেপ্টেম্বরে শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে SL-MICE Expo 2025

শ্রীলঙ্কা কনভেনশন ব্যুরোর (Sri Lanka Convention Bureau – SLCB) তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত SL-MICE Expo 2025।…

Jul 31, 2025
Scroll to Top