রোববার (২৪ আগস্ট ২০২৫) রাজধানীর বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে (বিএসএইচআই) শিশুদের রক্তজনিত রোগের চিকিৎসা জোরদারে নতুন প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়েছে। “ঢাকা জেলার শিশুদের হেমাটোলজিক্যাল রোগের জন্য চিকিৎসা ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ প্রকল্প” শীর্ষক এ উদ্যোগে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত মি. সাইদা শিনইচি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনইচি বলেন, “আমি আশা করি, এই প্রকল্প ঢাকাসহ সারাদেশের শিশুদের হেমাটোলজিক্যাল রোগের চিকিৎসা উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করবে।”
জাপান সরকারের গ্রান্ট অ্যাসিস্ট্যান্স ফর গ্রাসরুটস হিউম্যান সিকিউরিটি প্রজেক্টস (GGHSP) এর অনুদানে বিএসএইচআইতে স্থাপন করা হয়েছে একটি রেফ্রিজারেটেড সেন্ট্রিফিউজ মেশিন, একটি প্লাজমা স্টোরেজ ফ্রিজার এবং একটি স্বয়ংক্রিয় অ্যাফেরেসিস মেশিন। এসব অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে হাসপাতালে রক্তের বিভিন্ন উপাদান আলাদা করে শিশু রোগীদের জন্য নিরাপদ রক্ত উপাদান সঞ্চালন (কম্পোনেন্ট ট্রান্সফিউশন) সম্ভব হবে।
এখন থেকে রক্ত ক্যান্সার ও থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের উন্নত ও ঝুঁকিমুক্ত চিকিৎসা দেওয়া যাবে, যা গ্রাফট ভার্সেস হোস্ট ডিজিজ-এর মতো জটিলতা কমাতে সহায়ক হবে।
বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ৮ হাজার নবজাতক থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হয় এবং বহু শিশু রক্ত ক্যান্সারে ভোগে। যন্ত্রপাতির অভাবে এতদিন বিএসএইচআইকে বেসরকারি হাসপাতাল থেকে উচ্চমূল্যে রক্ত উপাদান সংগ্রহ করতে হতো। এতে পরিবারের ওপর অতিরিক্ত আর্থিক চাপ সৃষ্টি হতো এবং প্রতিবছর অন্তত ৯০ জন শিশু চিকিৎসার বাইরে থেকে যেত। নতুন এই যন্ত্রপাতি যুক্ত হওয়ায় এখন থেকে সারাদেশের প্রায় ৪,২০০ শিশু রোগী বিএসএইচআই-তে স্বল্প খরচে জীবনরক্ষাকারী রক্ত উপাদান সঞ্চালন সেবা নিতে পারবে।
উল্লেখ্য, ১৯৮৯ সাল থেকে জাপান সরকার GGHSP কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশে মোট ২২১টি এনজিও প্রকল্পে সহায়তা দিয়েছে, যার আর্থিক পরিমাণ প্রায় ১ কোটি ৭৫ লাখ মার্কিন ডলার। এসব উদ্যোগ মূলত তৃণমূল পর্যায়ে অর্থনৈতিক ও সামাজিক মানব নিরাপত্তা জোরদারে ভূমিকা রাখছে।