July 31, 2025

  • Home
  • All
  • বাংলাদেশে একটি শান্তিপূর্ণ ও সফল জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রচেষ্টাকে চীন সমর্থন জানায়: চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন
Image

বাংলাদেশে একটি শান্তিপূর্ণ ও সফল জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রচেষ্টাকে চীন সমর্থন জানায়: চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন

আজ মঙ্গলবার (২৯ জুলাই, ২০২৫) জাতীয় প্রেসক্লাবে কূটনৈতিক প্রতিবেদকদের সংগঠন-ডিক্যাব আয়োজিত ‘ডিক্যাব টক’-এ এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে চীনের অবস্থান প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘নির্বাচনের সময় নির্ধারণ বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের নিজস্ব বিষয়। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনকার্যকে চীন সমর্থন করে এবং বাংলাদেশে একটি শান্তিপূর্ণ ও সফল জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রচেষ্টাকে সমর্থন জানায়। একইসঙ্গে বাংলাদেশের জাতীয় পরিস্থিতির উপযোগী একটি উন্নয়ন পথ অনুসরণের প্রচেষ্টায়ও চীন সমর্থন অব্যাহত রাখবে।’

ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে সাম্প্রতিক বিমান দুর্ঘটনায় রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন গভীর শোক প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘এই ঘটনায় চীন গভীরভাবে মর্মাহত।’

বিমান দুর্ঘটনার তদন্তে চীন সহায়তা দিবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার চাইলে চীন সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।’

বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক প্রসঙ্গে ইয়াও ওয়েন জানান, সম্প্রতি চীনের কুনমিং শহরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের ত্রিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ১২টি নির্দিষ্ট খাতে আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত হয়েছে তিন দেশ।

তিনি বলেন, ‘এটা খুবই স্বাভাবিক। চীন বহু দেশের সঙ্গে সম্পর্ক রাখে। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সঙ্গে মিলে চীন ত্রিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও দৃঢ় করতে এবং বাস্তবসম্মত ফলাফল অর্জন করতে চায়।’

রাষ্ট্রদূত জানান, চীন বাংলাদেশের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্ব এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ দেশের উন্নয়ন, সার্বভৌমত্ব ও বহুপাক্ষিক সহযোগিতায় আগের মতোই চীনের সমর্থন অব্যাহত থাকবে।

তিনি বলেন, ‘গত এক বছরে চীন ও বাংলাদেশ উভয় দেশই একদিকে ঐতিহাসিক সুযোগ, অন্যদিকে বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের মুখোমুখি হয়েছে। তারপরও আমাদের সম্পর্কের মূল ভিত্তি পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সমতার বিষয় এখনো অটুট রয়েছে।’

চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মূল ভিত্তি হচ্ছে রাজনৈতিক পারস্পরিক বিশ্বাস, যা আরও শক্তিশালী হচ্ছে। এর উদাহরণ হিসেবে তিনি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক চীন সফর ও প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তার বৈঠকের কথা উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ‘দুই নেতা গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয়ে একমত হয়েছেন, যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নে কৌশলগত নির্দেশনা হিসেবে কাজ করবে।’

তিনি জানান, সিপিসি পলিটিক্যাল ব্যুরোর সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের মধ্যে বৈঠকেও পারস্পরিক স্বার্থ এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছেন, চীনের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতা গড়ে তোলার ব্যাপারে বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে ঐকমত্য রয়েছে।’

অর্থনৈতিক সম্পর্ক প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত জানান, বাংলাদেশ থেকে সব শুল্কযোগ্য পণ্যের ওপর ২০২৮ সাল পর্যন্ত শূন্য শুল্ক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে এবং দুই দেশের উন্নয়ন কৌশল সমন্বয়ের কাজ গভীরতর হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ ৩ দশমিক ৭ গুণ বেড়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগকারী হয়ে উঠেছে।’

বাংলাদেশি পণ্য আমদানিতে চীনের আগ্রহের কথা জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘সম্প্রতি বাংলাদেশের আম চীনা বাজারে প্রবেশ করেছে, যা দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্কের নতুন মাইলফলক।’

দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষ্যে বছরব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে বলেও জানান ইয়াও ওয়েন। এর মধ্যে রয়েছে- ঢাকায় ঐতিহাসিক ড্রোন শো, চিকিৎসা সহায়তা, গণমাধ্যম কর্মীদের সফর ও শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন সুযোগ বাড়ানো।

বর্তমানে প্রতি সপ্তাহে ৬৮টি ফ্লাইটে ১৩ হাজারের বেশি যাত্রী যাতায়াত করছেন এবং প্রায় ১৫ হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী চীনে উচ্চশিক্ষা নিচ্ছেন বলেও জানান তিনি।

জাতিসংঘসহ বৈশ্বিক মঞ্চে বাংলাদেশ ও চীনের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে বলে উল্লেখ করেন ইয়াও ওয়েন। শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের অবদান এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যে অগ্রগতির প্রশংসা করেন তিনি।

তিনি একচেটিয়া বাণিজ্যনীতি ও সুরক্ষাবাদী মনোভাবের সমালোচনা করে বলেন, ‘বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র এমন নীতি গ্রহণ করেছে।’

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘চীন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও)’র নিয়ম এবং বহুপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থাকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পাশে আছে। একতরফা চাপে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে চীন বাংলাদেশের সঙ্গে সংহতি ও সমন্বয় জোরদার করতে প্রস্তুত এবং বৈশ্বিক ন্যায্যতা ও ন্যায়বিচার রক্ষায় একযোগে কাজ করতে চায়।’

অনুষ্ঠানে ডিক্যাব সভাপতি এ কে এম মঈনুদ্দিন সভাপতিত্ব করেন এবং সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফুজ্জামান মামুন স্বাগত বক্তব্য দেন।

সূত্রঃ বাসস।

Related Posts

চীন-বাংলাদেশ স্বাস্থ্যখাতে সহযোগিতা আরও জোরদার হবে: স্বাস্থ্য উপদেষ্টার সঙ্গে চীনা রাষ্ট্রদূতের বৈঠক

চীন-বাংলাদেশ স্বাস্থ্যখাতে সহযোগিতা আরও জোরদার হবে: স্বাস্থ্য উপদেষ্টার সঙ্গে চীনা রাষ্ট্রদূতের বৈঠক

মঙ্গলবার (৩০ জুলাই, ২০২৫) বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত মি. ইয়াও ওয়েন সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাস্থ্য ও…

Jul 31, 2025
বাংলাদেশ-চীন কৃষি সহযোগিতা নিয়ে স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টার সঙ্গে চীনা রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ

বাংলাদেশ-চীন কৃষি সহযোগিতা নিয়ে স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টার সঙ্গে চীনা রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ

বুধবার (৩০ জুলাই, ২০২৫) বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত মি. ইয়াও ওয়েন অন্তর্বর্তী সরকারের মাননীয় স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা…

Jul 31, 2025
ফুলব্রাইট স্কলারদের অভিনন্দন জানালেন ইউএস চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স

ফুলব্রাইট স্কলারদের অভিনন্দন জানালেন ইউএস চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স

২০২৫-২৬ সালের ফুলব্রাইট বিদেশি শিক্ষার্থী ও বিদেশি ভাষা শিক্ষণ সহকারী কর্মসূচিতে নির্বাচিত অংশগ্রহণকারীদের যুক্তরাষ্ট্রে রওনা দেওয়ার আগে তাদের…

Jul 31, 2025
Scroll to Top